জ্যোতিষ শিখতে হলে এগুলো আগে জানুন
- Nov 30, 2024
- 13 min read
তিথি পরিচয় :---
জ্যোতিষ বিজ্ঞান মতে চন্দ্র পৃথিবীর চতুর্দিকে একবার প্রদক্ষিণ করতে ত্রিশ দিন লাগে। চন্দ্র ও পৃথিবী ঘুর্ণনের ফলে চন্দ্র ক্রমশ দৃশ্যমান হতে হতে পনের দিনে সম্পূর্ণ দৃশ্যমান হয় যাকে পূর্ণিমা বলে এবং পরবর্তী পনের দিন পর সম্পূর্ণ অদৃশ্য হয় যাকে অমাবস্যা বলে। যে একক সময়ে চন্দ্রের এরকম হ্রাস-বৃদ্ধি ঘটে তাকে প্রতিপদ , দ্বিতীয়া আদি তিথি বলে। অমাবস্যার পরের দিন অর্থাৎ প্রতিপদ থেকে পূর্ণিমা পর্যন্ত পনের দিন শুক্ল পক্ষ এবং পূর্ণিমার পরের দিন অর্থাৎ প্রতিপদ থেকে অমাবশ্যা পর্যমত্ম পনের দিন কৃষ্ণ পক্ষ নামে পরিচিত।
শুক্ল পক্ষের তিথির নাম :- ১) প্রতিপদ , ২) দ্বিতীয়া , ৩) তৃতীয়া , ৪) চতুর্থী , ৫) পঞ্চমী ,
৬) ষষ্ঠী , ৭) সপ্তমী , ৮) অষ্টমী , ৯) নবমী ,
১০) দশমী , ১১) একাদশী , ১২) দ্বাদশী ,
১৩) ত্রয়োদশী , ১৪) চতুর্দশী ও ১৫) পূর্ণিমা।
কৃষ্ণ পক্ষের তিথির নাম :- ১৬) প্রতিপদ ,
১৭) দ্বিতীয়া , ১৮) তৃতীয়া , ১৯) চতুর্থী ,
২০) পঞ্চমী , ২১) ষষ্ঠী , ২২) সপ্তমী , ২৩) অষ্টমী , ২৪) নবমী , ২৫) দশমী , ২৬) একাদশী ,
২৭) দ্বাদশী , ২৮) ত্রয়োদশী , ২৯) চতুর্দশী ও
৩০) অমাবস্যা।
তিথিসমূহ পাঁচ ভাগে বিভক্ত যথা :- নন্দা , ভদ্রা , জয়া , রিক্তা ও পূর্ণা।
প্রতিপদ , ষষ্ঠী ও একাদশীকে নন্দা ;
দ্বিতীয়া , সপ্তমী ও দ্বাদশীকে ভদ্রা ;
তৃতীয়া , অষ্টমী ও ত্রয়োদশীকে জয়া ;
চতুর্থী , নবমী ও চতুর্দশীকে রিক্তা এবং
পঞ্চমী , দশমী , অমাবস্যা ও পূর্ণিমাকে পূর্ণা বলে।
নক্ষত্র পরিচয় :-----
মহাকাশে অগণিত নক্ষত্র রয়েছে। তার মধ্যে পৃথিবীর উপর সাতাশটি নক্ষত্রের প্রভাব বিদ্যমান। জ্যোতিষ শাস্ত্রে উল্লিখিত সাতাশটি নক্ষত্রের নাম যথা :-----
১) অশ্বিনী , ২) ভরণী , ৩) কৃত্তিকা , ৪) রোহিণী ,
৫) মৃগশিরা , ৬) আর্দ্রা , ৭) পুনর্বসু , ৮) পুষ্যা ,
৯) অশ্লেষা , ১০) মঘা , ১১) পূর্ব-ফাল্গুনী ,
১২) উত্তর-ফাল্গুনী , ১৩) হস্তা , ১৪) চিত্রা ,
১৫) স্বাতী , ১৬) বিশাখা , ১৭) অনুরাধা ,
১৮) জ্যেষ্ঠা , ১৯) মূলা , ২০) পূর্বাষাঢ়া ,
২১) উত্তরাষাঢ়া , ২২) শ্রবণা , ২৩) ধনিষ্ঠা ,
২৪) শতভিষা , ২৫) পূর্ব-ভাদ্রপদ , ২৬) উত্তর-ভাদ্রপদ ও ২৭) রেবতী।
হিন্দু-পুরাণ মতে এই সাতাশটি নক্ষত্র কোন দীপ্তিমান জড় বস্ত্ত নয়। প্রকৃতক্ষে এই সাতাশটি নক্ষত্র মূলত দক্ষের সাতাশ কন্যা। চন্দ্র এই সাতাশ কন্যাকে বিবাহ করেছেন। যা হোক , চন্দ্র পর্যায়ক্রমে একটি ন্ত্রে একদিন অবস্থান করেন। চন্দ্র ব্যতীত অন্যান্য গ্রহগণও সাতাশটি নক্ষত্রকে পর্যায়ক্রমে নির্দিষ্ট সময় ব্যবধানে অতিক্রম করেন।
নক্ষত্রসমূহকে বিভিন্নভাবে বিভক্ত করা হয়েছে। যেমন :----
উগ্রগণ :---- পূর্ব-ফাল্গুনী , পূর্বাষাঢ়া , পূর্ব-ভাদ্রপদ , মঘা ও ভরণী নক্ষত্র।
ধ্রুবগণ :---- উত্তর ফাল্গুনী , উত্তরাষাঢ়া , উত্তর-ভাদ্রপদ ও রোহিণী নক্ষত্র।
চরগণ :---- স্বাতী , পুনর্বসু , শ্রবণা , ধনিষ্ঠা ও শতভিষা নক্ষত্র।
ক্ষিপ্রগণ :---- পুষ্যা , অশ্বিনী ও হস্তা নক্ষত্র।
মৃদুগণ :--- চিত্রা , অনুরাধা , মৃগশিরা ও রেবতী নক্ষত্র।
তীক্ষ্ণগণ :---- আর্দ্রা , অশ্লেষা , জ্যেষ্ঠা ও মূলা নক্ষত্র।
মিশ্রগণ :--- কৃত্তিকা ও বিশাখা।
জ্যোতিষ শাস্ত্র মতে তারাশুদ্ধি :--------
জাতকের জন্ম-নক্ষত্র থেকে নয়টি করে তারা বা নক্ষত্রকে যথাক্রমে জন্ম , সম্পদ , বিপদ , ক্ষেম , প্রত্যারি , সাধক , বধ , মিত্র ও পরমমিত্র নাড়ি বলা হয়।
জ্যোতিষ বিজ্ঞান মতে যদি জাতকের অশ্বিনী অর্থাৎ ১ নং নক্ষত্রে জন্ম হয় , তবে ১ নং জন্ম ,
২ নং সম্পদ , ৩ নং বিপদ এই ক্রমে ৯ নং পরমমিত্র নাড়ি হবে এবং ১০ নং আবার জন্ম নাড়ি হবে ; এভাবে ২৭টি তারা নয় প্রকার নাড়িতে অবস্থান করবে। এই নিয়মে যদি ১০ নং নক্ষত্রে জন্ম হয় তবে ১০, ১৯ ও ১ নং তারাকে জন্ম নাড়ি , ১১ , ২০ ও ২ নং তারাকে সম্পদ নাড়ি , ১২ , ২১ ও ৩ নং তারাকে বিপদ নাড়ি , ১৩ , ২২ ও ৪ নং তারাকে ক্ষেম নাড়ি , ১৪ , ২৩ ও ৫ নং তারাকে প্রত্যারি নাড়ি , ১৫্য, ২৪ ও ৬ নং তারাকে সাধক নাড়ি , ১৬, ২৫ ও ৭ নং তারাকে বধ নাড়ি , ১৭ , ২৬ ও ৮ নং তারাকে মিত্র নাড়ি এবং ১৮ , ২৭ ও ৯ নং তারাকে পরমমিত্র নাড়ি বলা হয়। ৯টি নাড়ির মধ্যে বিপদ , প্রত্যারি ও বধ এই ৩টি নাড়ি অশুভ এবং অবশিষ্ট ৬টি নাড়ি শুভ। অশুভ নাড়ি যে দিন থাকবে ঐদিন বিবাহ আদি মাঙ্গলিক কর্ম বর্জনীয়। জন্ম নাড়ি ভিন্ন অন্যান্য শুভ নাড়িতে বিবাহ , শ্রাদ্ধ , যাত্রা ও ক্ষৌরী কর্ম প্রশস্ত।
করণ পরিচয় :----
প্রত্যেক তিথির পূর্বার্ধে ও শেষার্ধে একটি করে মোট দুইটি করণ থাকে। সাতটি চর-করণ ( গতিশীল বা অস্থির করণ ) ও চারটি ধ্রুব-করণ ( স্থির করণ ) সহ মোট এগারটি করণ রয়েছে , যথা -----
(ক) চর-করণ , ১) বব করণ , ২) বালব করণ ,
৩) কৌলব করণ , ৪) তৈতিল করণ , ৫) গর করণ , ৬) বণিজ করণ , ৭) বিষ্টি করণ।
(খ) ধ্রব-করণ- ৮) শকুনি করণ , ৯) চতুষ্পাদ করণ , ১০) নাগ করণ , ১১) কিন্তুঘ্ন করণ।
শুক্লপক্ষে প্রতিপদের শেষার্ধ হতে পর পর তিথির পূর্বার্ধ ও শেষার্ধ অনুসারে কৃষ্ণপক্ষের চতুর্দশী পর্যন্ত ২৯টি তিথির মোট ৫৬টি অর্ধাংশে ৭টি চর-করণ নির্দিষ্ট ক্রমে ৪ বার আবর্তিত হয়। অর্থাৎ শুক্লপক্ষের প্রতিপদের শেষার্ধে বব , দ্বিতীয়ার পূর্বার্ধে বালব ও শেষার্ধে কৌলব , তৃতীয়ার পূর্বার্ধে তৈতিল ও শেষার্ধে গড় , চতুর্থীর পূর্বার্ধে বণিজ ও শেষার্ধে বিষ্টি করণ হয় আবার পঞ্চমীর পূর্বার্ধ থেকে বব করণ শুরু হয় এবং এই ক্রমে আবর্তিত হতে হতে কৃষ্ণপক্ষের চতুর্দশীতে বিষ্ট করণ হয়। একই নিয়মে কৃষ্ণপক্ষের চতুর্দশীর শেষার্ধ হতে তিথির পূর্বার্ধ ও শেষার্ধ অনুসারে শুক্লপক্ষের প্রতিপদের পূর্বার্ধ পর্যন্ত ধ্রুব-করণ গণনা করা হয়।
জ্যোতিষ শাস্ত্র মতে বিষ্টিভদ্রা করণ পরিচয়
শুক্লপক্ষের একাদশী ও চতুর্থীর শেষার্ধ , অষ্টমী ও পূর্ণিমার পূর্বার্ধ এবং কৃষ্ণপক্ষের তৃতীয় ও দশমীর শেষার্ধ , সপ্তমী ও চতুর্দশীর পূর্বার্ধকে বিষ্টিভদ্রা বলে।
কর্কট , সিংহ , কুম্ভ ও মীন রাশিতে বিষ্টিভদ্রা হলে বিষ্টি পৃথিবীতে বাস করে। মেষ , বৃষ , মিথুন ও বৃশ্চিক রাশিতে বিষ্টিভদ্রা হলে বিষ্টি স্বর্গে বাস করে। কন্যা , তুলা , ধনু ও মকর রাশিতে বিষ্টিভদ্রা হলে বিষ্টি পাতালে বাস করে। বিষ্টিভদ্রায় বিষ্টি পৃথিবীতে বাস করলে সকল কার্য নাশ , বিষ্টি স্বর্গে বাস করলে সকল কার্য সিদ্ধি এবং বিষ্টি পাতালে বাস করলে ধনবৃদ্ধি ঘটে। বিষ্টিভদ্রা মোট ১২ ঘণ্টা বা ৩০ দণ্ড অবস্থান করে। বিষ্টিভদ্রার ৩০ দণ্ডের প্রথম ৫ দণ্ডকে মুখ , পরের ১ দণ্ডকে কণ্ঠ , পরের ১১ দণ্ডকে বক্ষ , পরের ৪ দণ্ডকে নাভি , পরের ৬ দণ্ডকে কটি এবং শেষ ৩ দণ্ডকে পুচ্ছ বলে।
বিষ্টিভদ্রার মুখে কর্ম করলে কার্যহানি , কণ্ঠে মৃত্যু , বক্ষ ধনহানি , নাভিতে কলহ্য, কটিতে বুদ্ধিনাশ এবং পুচ্ছে কর্ম করলে বিজয় বা সিদ্ধিলাভ হয়।
যোগ পরিচয় :----
জ্যোতিষ শাস্ত্র অনুসারে মোট সাতাশটি যোগ রয়েছে। প্রতিদিন একটি করে যোগ থাকে এবং এই যোগসমূহ পর্যায়ক্রমে আবর্তিত হয়। সাতাশটি যোগের নাম- ১) বিকুম্ভ , ২) প্রীতি , ৩) আয়ুষ্মান ,
৪) সৌভাগ্য , ৫) শোভন , ৬) অতিগন্ড , ৭) সুকর্মা ,
৮) ধৃতি , ৯) শূল , ১০) গন্ড , ১১) বৃদ্ধি , ১২) ধ্রুব ,
১৩) ব্যাঘাত , ১৪) হর্ষণ , ১৫) বজ্র , ১৬) অসৃক ,
১৭) ব্যতীপাত , ১৮) বরীয়ান , ১৯) পরিঘ ,
২০) শিব , ২১) সাধ্য , ২২) সিদ্ধ , ২৩) শুভ ,
২৪) শুক্র , ২৫) ব্রহ্ম , ২৬) ইন্দ্র ও ২৭) বৈধৃতি।
পরিঘ যোগের প্রথমার্ধ,
বিকুম্ভ যোগের ১ম ৫ দং ,
শূল যোগের ১ম ৭ দং ,
গ- ও ব্যাঘাত যোগের ১ম ৬ দং ,
হর্ষণ ও বজ্র যোগের ১ম ৯ দণ্ড এবং
বৈধৃতি ও ব্যতীপাত যোগের সমসত্ম কাল পরিত্যাগ করে শুভকর্ম করলে তা সফল হয়।
অন্য যোগসমূহ তাদের নাম অনুসারে ফল প্রদান করে।
যেমন- সৌভাগ্য যোগে সৌভাগ্য বৃদ্ধি ঘটে , সিদ্ধ যোগে কার্যসিদ্ধি ঘটে প্রভৃতি।
জ্যোতিষ শাস্ত্র অনুযায়ী সময়ের হিসাব :----
চোখের পাতা পড়তে যে সময় লাগে তাকে নিমেষ বলে।
১৫ নিমেষে ১ কাষ্ঠা ,
৩০ কাষ্ঠায় ১ কলা এবং ৩০ কলায় এক মুহূর্ত ,
৩০ মুহূর্তে ১ দিবা-রাত্র হয়।
৭ দিবা-রাত্রে ১ সপ্তাহ ,
১৫ দিবা-রাত্রে ১ পক্ষ এবং
৩০ দিবা-রাত্রে এক মাস হয়।
৩৬৫ দিবা-রাত্রে বা ১২ মাসে ১ বৎসর হয়।
আবার ৬০ বিপলে ১ পল ,
৬০ পলে ১ দণ্ড ,
২ দণ্ডে ১ মুহূর্ত এবং ৬০ দণ্ডে ১ দিবা-রাত্র।
আধুনিক নিয়মে ৬০ সেকেণ্ডে ১ মিনিট ,
৬০ মিনিটে ১ ঘণ্টা এবং ২৪ ঘণ্টায় এক দিবা-রাত্র। তাই ঘণ্টার হিসাবে সোয়া মুহূর্তে ১ ঘণ্টা বা ৪৮ মিনিটে ১ মুহূর্ত এবং আড়াই দণ্ডে ১ ঘণ্টা বা ২৪ মিনিটে ১ দন্ড।
এক দিবা-রাত্রের আট ভাগের এক ভাগ সময়কে প্রহর বলে। ঘণ্টার হিসাবে ৩ ঘণ্টায় ১ প্রহর এবং ৮ প্রহরে এক দিন।
যামার্ধ দুটি , যথা- দিবা ও রাত্রি যামার্ধ।
দিনমানের আট ভাগের এক ভাগ সময়কে দিবা-যামার্ধ এবং রাত্রিমানের আট ভাগের এক ভাগ সময়কে রাত্রি-যামার্ধ বলে অর্থাৎ ৮ দিবা-যামার্ধে ১ দিন এবং ৮ রাত্রি-যামার্ধে ১ রাত হয়। দিনমান বা রাত্রিমান বার ঘণ্টা হলে দেড় ঘণ্টায় এক যামার্ধ হয়।
জ্যোতিষ শাস্ত্র মতে বার , পক্ষও মাস পরিচয় :-----
জ্যোতিষ শাস্ত্র মতে একটি সপ্তাহে সাতটি বার রয়েছে যথা :----
রবি , সোম , মঙ্গল , বুধ , বৃহস্পতি , শুক্র ও শনি বার।
সোম , বুধ , বৃহস্পতি ও শুক্র এই চারটি বার সর্বকার্যে শুভ এবং শনি , রবি ও মঙ্গল এই তিনটি বার অশুভ।
পক্ষ দুটি , যথা :-- শুক্ল ও কৃষ্ণ পক্ষ।
বার মাসে এক বছর হয়।
বারোটি মাসের নাম :----- ১) বৈশাখ , ২) জ্যৈষ্ঠ ,
৩) আষাঢ় , ৪) শ্রাবণ , ৫) ভাদ্র , ৬) আশ্বিন ,
৭) কার্তিক , ৮) অগ্রহায়ণ , ৯) পৌষ , ১০) মাঘ , ১১) ফাল্গুন এবং ১২) চৈত্র।
জ্যোতিষ শাস্ত্র মতে বারবেলা , কালবেলা ও কালরাত্রি :----
রবি বারে দিনের ৪র্থ ও ৫ম ,
সোম বারে ২য় ও ৭ম ,
মঙ্গল বারে ৬ষ্ঠ ও ২য় ,
বুধ বারে ৫ম ও ৩য় ,
বৃহস্পতি বারে ৭ম ও ৮ম ,
শুক্র বারে ৩য় ও ৪র্থ এবং
শনি বারে ১ম, ৬ষ্ঠ ও ৮ম যামার্ধকে বারবেলা ও কালবেলা বলে।
রবি বারে রাত্রির ৬ষ্ঠ ,
সোম বারে ৪র্থ ,
মঙ্গল বারে ২য় ,
বুধ বারে ৭ম ,
বৃহস্পতি বারে ৫ম ,
শুক্র বারে ৩য় এবং
শনি বারে ১ম ও ৮ম যামার্ধকে কালরাত্রি বলে।
কালবেলা ও কালরাত্রিতে যাত্রা এবং বিবাহ , উপনয়ন আদি শুভকর্ম পরিত্যাগ করা উচিত।
জ্যোতিষ শাস্ত্র মতে মাসদগ্ধা , চন্দ্রদগ্ধা , ত্র্যস্পর্শ ও মল-মাস কথন :-----
জ্যোতিষ শাস্ত্র মতে বৈশাখ মাসের শুক্লা ৬ষ্ঠী , জ্যৈষ্ঠ মাসের কৃষ্ণা ৪র্থী ,
আষাঢ় মাসের শুক্লা ৮মী ,
শ্রাবণ মাসের কৃষ্ণা ৬ষ্ঠী ,
ভাদ্র মাসের শুক্লা ১০মী ,
আশ্বিন মাসের কৃষ্ণা ৮মী ,
কার্তিক মাসের শুক্লা দ্বাদশী ,
অগ্রহায়ণ মাসের কৃষ্ণা ১০মী ,
পৌষ মাসের শুক্লা ২য়া ,
মাঘ মাসের কৃষ্ণা ১২শী ,
ফাল্গুন মাসের শুক্লা ৪র্থী এবং
চৈত্র মাসের কৃষ্ণা ২য়া তিথিকে মাসদগ্ধা বলে।
চন্দ্র শুক্লপক্ষের ২য়া তিথিতে ধনু রাশিতে ,
৪র্থী তিথিতে কুম্ভ রাশিতে ,
৬ষ্ঠী তিথিতে মেষ রাশিতে ,
৮মী তিথিতে মিথুন রাশিতেৎ,
দশমী তিথিতে সিংহ রাশিতে ও
১২শী তিথিতে তুলা রাশিতে এবং
চন্দ্র কৃষ্ণ পক্ষের ২য়া তিথিতে মীন রাশিতে ,
৪র্থী তিথিতে বৃষ রাশিতে ,
৬ষ্ঠী তিথিতে কর্কট রাশিতে ,
৮মী তিথিতে কন্যা রাশিতে ,
১০মী তিথিতে বৃশ্চিক রাশিতে ও
১২শী তিথিতে মকর রাশিতে অবস্থান করলে চন্দ্রদগ্ধা হয়।
জ্যোতিষ শাস্ত্রে অধম , ত্র্যস্পর্শ ও মল-মাস বিশেষ প্রণিধানযোগ্য। একদিনে অর্থাৎ এক দিবা-রাত্রে দুই তিথির অমত্ম হলে ঐ দিনকে অবম বলে। একদিনে তিন তিথি অবস্থান করলে ঐ দিনকে ত্র্যস্পর্শ বলে।
যে মাসে দুইটি অমাবশ্যা হয় ঐ মাসকে মল-মাস বলে। অধম ও ত্র্যস্পর্শে যাত্রা ও বিবাহ আদি শুভকর্ম নিষিদ্ধ। মল মাসেও বিবাহ আদি শুভকর্ম করা অনুচিত।
তিথি সংশ্লিষ্ট যোগ :-----
জ্যোতিষ শাস্ত্র অনুসারে শুক্র বারে নন্দা ,
বুধ বারে ভদ্রা , মঙ্গল বারে জয়া ,
শনি বারে রিক্তা এবং বৃহস্পতি বারে পূর্ণা তিথি হলে সিদ্ধি-যোগ হয়।
রবি ও সোম বারে পূর্ণা ,
মঙ্গল বারে ভদ্রা ,
বৃহস্পতি বারে জয়া ,
বুধ ও শনি বারে নন্দা এবং
শুক্র বারে রিক্তা তিথি হলে তিথ্যামৃত-যোগ হয়।
রবি ও মঙ্গল বারে নন্দা ,
সোম ও শুক্র বারে ভদ্রা ,
বুধ বারে জয়া ,
বৃহস্পতি বারে রিক্তা এবং
শনি বারে পূর্ণা তিথি হলে পাপযোগ হয়।
রবি বারে দ্বাদশী ,
সোম বারে একাদশী ,
মঙ্গল বারে দশমী ,
বুধ বারে তৃতীয়া ,
বৃহস্পতি বারে ষষ্ঠী ,
শুক্র বারে দ্বিতীয়া এবং
শনি বারে তৃতীয়া হলে দিনদগ্ধা বা তিথিদগ্ধা-যোগ হয়।
রবি বারে দ্বাদশী ও মঘা ,
সোম বারে একাদশী ও কৃত্তিকা ,
মঙ্গল বারে দশমী ও আদ্রা ,
বুধ বারে তৃতীয়া ও মূলা ,
বৃহস্পতি বারে ষষ্ঠী ও ভরণী ,
শুক্র বারে দ্বিতীয়া ও অশ্বিনী এবং
শনি বারে সপ্তমী ও অশেস্নষা হলে মহাদগ্ধা হয়।
সোম বারে ষষ্ঠী ,
শুক্র বারে সপ্তমী,
বৃহস্পতি বারে অষ্টমী ,
বুধ বারে নবমী ,
শনি বারে দশমী,
মঙ্গল বারে একাদশী এবং
রবি বারে দ্বাদশী তিথি হলে কালঘণ্টা-যোগ হয়।
রবি বারে দ্বাদশী ,
সোম বারে একাদশী ,
মঙ্গল বারে দশমী ,
বুধ বারে নবমী ,
বৃহস্পতি বারে অষ্টমী ,
শুক্র বারে সপ্তমী এবং
শনি বারে ষষ্ঠী তিথি হলে ক্রকচ-যোগ হয়।
সোম বারে প্রতিপদ ও ষষ্ঠী ,
বৃহস্পতি বারে ভদ্রা ,
রবি ও শনি বারে জয়া ,
মঙ্গল বারে রিক্তা এবং
বুধ ও শুক্র বারে পূর্ণা তিথি হলে রত্নাঙ্কুর-যোগ হয়।
নক্ষত্র সংশ্লিষ্ট যোগ :-----
জ্যোতিষ শাস্ত্র মতে রবি বারে উত্তর-ফাল্গুনী, উত্তরাষাঢ়া , উত্তর-ভাদ্রপদ , রোহিণী , পুষ্যা , হস্তা , মূলা ও রেবতী ;
সোম বারে শ্রবণা , ধনিষ্ঠাৎ, রোহিণী , মৃগশিরা , পূর্ব-ফাল্গুনী , উত্তর-ফাল্গুনী , পূর্ব-ভাদ্রপদ , উত্তর-ভাদ্রপদ , হস্তা ও অশ্বিনী ;
মঙ্গল বারে পুষ্যা , অশ্লেষা , কৃত্তিকাৎ, স্বাতী , উত্তর-ভাদ্রপদ ও রেবতী ;
বুধ বারে কৃত্তিকা , রোহিণীৎ, অনুরাধা , শতভিষা ;
বৃহস্পতি বারে স্বাতী , পুনর্বসু , পুষ্যা ও অনুরাধা ;
শুক্র বারে পূর্ব-ফাল্গুনী , উত্তর-ফাল্গুনী , পূর্ব-ভাদ্রপদ , উত্তর-ভাদ্রপদ , অশ্বিনী , শ্রবণা ও অনুরাধা এবং
শনি বারে স্বাতী ও রোহিণী নক্ষত্র হলে নক্ষত্রামৃত-যোগ হয়।
সিদ্ধি ও নক্ষত্রামৃত যোগ যদি একইদিনের যে কোন সময় মিলিত হয় , তবে তাকে বিষযোগ বলে।
রবি ও মঙ্গল বারে নন্দা তিথি ও স্বাতী , শতভিষা , আর্দ্রা , রেবতী , চিত্রা , অশ্লেষাৎ, মূলা ও কৃত্তিকা নক্ষত্র ,
শুক্র ও সোম বারে ভদ্রা তিথি ও পূর্ব-ফাল্গুনী, উত্তর-ফাল্গুনী , পূর্ব-ভাদ্রপদ ও উত্তর-ভাদ্রপদ নক্ষত্র ,
বুধ বারে জয়া তিথি ও মৃগশিরা , শ্রবণা , পুষ্যা , জ্যেষ্ঠা , অশ্বিনীৎ, ভরণী ও অভিজিৎ নক্ষত্র ,
বৃহস্পতি বারে রিক্তা তিথি ও পূর্বাষাঢ়া, উত্তরাষাঢ়া , বিশাখাৎ, অনুরাধা , পুনর্বসু , মঘা , নক্ষত্র এবং
শনি বারে পূর্ণা তিথি ও রোহিণী , হস্তা ও ধনিষ্ঠা নক্ষত্র হলে ত্র্যমৃতযোগ হয়।
রবি বারে অশ্বিনী ,
সোম বারে চিত্রা ,
মঙ্গল বারে উত্তরাষাঢ়া ,
বুধ বারে মূলা ,
বৃহস্পতি বারে শতভিষা ,
শুক্র বারে পুষ্যা এবং
শনি বারে ভরণী নক্ষত্র হলে ক্রকচ-যোগ হয়।
জ্যোতিষ শাস্ত্র মতে বর্ণ ও গণ :----
রাশি অনুসারে বর্ণ এবং নক্ষত্র অনুসারে গণ নির্ণয় করা হয়।
কর্কট , বৃশ্চিক ও মীন রাশির জাতক বিপ্র-বর্ণ , সিংহ , তুলা ও ধনু রাশির জাতক ক্ষত্রিয়-বর্ণ ,
মেষ , মিথুন ও কুম্ভ রাশির জাতক বৈশ্য-বর্ণ
এবং বৃষ , কন্যা ও মকর রাশির জাতক শূদ্র-বর্ণ লাভ করে।
২৭ টা নক্ষত্র অনুযায়ী গণ নির্ণয় করা হয়ে থাকে ।
চন্দ্রের নক্ষত্র সংখ্যা অনুযায়ী গণ নির্ধারণ করিত হয় ।
" দমা রাম দমা দিন্দু যা রাম ভদ্রা দর ,
দূরে রাম মদারারি মামদা "
গণ সূচকা ।।
হস্তা , স্বাতী , মৃগশিরা , অশ্বিনী , শ্রবণা , পুষ্যা , রেবতী , অনুরাধা ও পুনর্বসু নক্ষত্রে জন্মগ্রহণ করলে দেবগণ হয়।
রোহিণী , আর্দ্রা , উত্তর-ফাল্গুনী , উত্তরাষাঢ়া , উত্তর-ভাদ্রপদ , ভরণী , পূর্ব-ফাল্গুনী , পূর্বাষাঢ়া ও পূর্ব-ভাদ্রপদ নক্ষত্রে জন্মগ্রহণ করলে নরগণ হয়।
কৃত্তিকা , অশ্লেষাৎ, মঘা , চিত্রা , বিশাখা , জ্যেষ্ঠা , মূলা , ধনিষ্ঠা শতভিষা নক্ষত্রে জন্মগ্রহণ করলে দেবারি বা রাক্ষসগণ হয়।
অষ্টোত্তরী ও বিংশোত্তরী জন্ম-দশা :------
জন্ম-নক্ষত্র অনুসারে জাতককে বিভিন্ন গ্রহের দশা ভোগ করতে হয়। জ্যোতিষ-শাস্ত্রে দুই প্রকার দশা প্রচলিত ------
যথা :-- অষ্টোত্তরী ও বিংশোত্তরী দশা।
জাতক কৃষ্ণপক্ষে দিনে ও শুক্লপক্ষে রাতে জন্মগ্রহণ করলে বিংশোত্তরী দশা এবং কৃষ্ণপক্ষে রাতে ও শুক্লপক্ষে দিনে জন্মগ্রহণ করলে অষ্টোত্তরী দশা প্রযোজ্য হবে।
অষ্টোত্তরী নিয়মে জাতক রবি ( ৬ বছর ) , চন্দ্র ( ১৫ বছর ) , মঙ্গল ( ৮ বছর ) , বুধ ( ১৭ বছর ) , শনি ( ১০ বছর ) , বৃহস্পতি ( ১৯ বছর ) , রাহু ( ১২ বছর ) ও শুক্র ( ২১ বছর ) এই আটটি গ্রহের দশা নির্দিষ্ট সময় ব্যবধানে উক্ত ক্রমে ভোগ করবে। যেমন :---- কেউ রবির দশায় জন্মগ্রহণ করলে তাকে রবির দশার ভোগ্যকাল শেষে ১৫ বছর চন্দ্রের দশা ভোগ করতে হবে এবং এরপর তাকে ৮ বছর মঙ্গলের দশা ভোগ করতে হবে , এভাবে মৃত্যর পূর্ব পর্যমত্ম তাকে পর্যায়ক্রমে বিভিন্ন গ্রহের দশা ভোগ করে যেতে হবে।
অষ্টোত্তরী মতে জন্ম-নক্ষত্র কৃত্তিকা , রোহিণী ও মৃগশিরা হলে প্রথমে রবির দশা হবে ,
আর্দ্রা , পুনর্বসু , পুষ্যা ও অশেস্নষা হলে প্রথমে চন্দ্রের দশা হবে ,
মঘা , পূর্ব-ফাল্গুনী ও উত্তর-ফাল্গুনী হলে প্রথমে মঙ্গলের দশা হবে ,
হস্তা , চিত্রা , স্বাতী ও বিশাখা হলে প্রথমে বুধের দশা হবে ,
অনুরাধা , জ্যেষ্ঠা ও মূলা হলে প্রথমে শনির দশা হবে ,
পূর্বাষাঢ়াৎ, উত্তরাষাঢ়া , শ্রবণা হলে প্রথমে বৃহস্পতির দশা হবে ,
ধনিষ্ঠাৎ, শতভিষা ও পূর্ব-ভাদ্রপদ হলে প্রথমে রাহুর দশা হবে এবং
উত্তর-ভাদ্রপদ , রেবতী, অশ্বিনী ও ভরণী হলে প্রথমে শুক্রের দশা হবে।
বিংশোত্তরী মতে, জাতক রবি ( ৬ বছর ) ,
চন্দ্র ( ১০ বছর ) , মঙ্গল ( ৭ বছর ) , রাহু ( ১৮ বছর ) , বৃহস্পতি ( ১৬ বছর ) , শনি ( ১৯ বছর ) ,
বুধ ( ১৭ বছর ) , কেতু ( ৭ বছর ) ও শুক্র ( ২০ বছর ) এই নয়টি গ্রহের দশা নির্দিষ্ট সময় ব্যবধানে উক্ত ক্রমে ভোগ করবে।
কৃত্তিকা, উত্তর-ফাল্গুনী ও উত্তরাষাঢ়া জন্ম-নক্ষত্র হলে প্রথমে রবির দশা হবে ,
রোহিণী, হস্তা ও শ্রবণা হলে প্রথমে চন্দ্রের দশা হবে ,
মৃগশিরা, চিত্রা ও ধনিষ্ঠা হলে প্রথমে মঙ্গলের দশা হবে ,
আর্দ্রা , স্বাতী ও শতভিষা হলে প্রথমে রাহুর দশা হবে ,
পুনর্বসু , বিশাখা ও পূর্ব-ভাদ্রপদ হলে প্রথমে বৃহস্পতির দশা হবেৎ,
পুষ্যা , অনুরাধা ও উত্তর-ভাদ্রপদ হলে প্রথমে শনির দশা হবে ,
অশ্লেষা , জ্যেষ্ঠা ও রেবতী হলে প্রথমে বুধের দশা হবে ,
মঘা , মূলা ও অশ্বিনী হলে প্রথমে কেতুর দশা হবে
এবং পূর্ব-ফাল্গুনী , পূর্বাষাঢ়া ও ভরণী হলে প্রথমে শুক্রের দশা হবে।
এখন অষ্টোত্তরী মতে প্রথম দশার ভোগ্যকাল নির্ণয় প্রসঙ্গে আসা যাক। ধরা যাক , কোন জাতক রোহিণী নক্ষত্রের ৩০ দণ্ডে ( ১২ ঘণ্টা ) জন্মগ্রহণ করেছেন। যেহেতু কৃত্তিকা , রোহিণী ও মৃগশিরা নক্ষত্রে জন্মগ্রহণ করলে জাতকের প্রথমে রবির দশা হয় সেহেতু ঐ জাতক রোহিণী নক্ষত্রে জন্মগ্রহণ করায় তাকে প্রথমে রবির দশা ভোগ করতে হবে। এখন ৩টি নক্ষত্রের জন্য রবির মোট ভোগ্য বছর ৬। তাহলে প্রতিটি নক্ষত্রকে রবি ৬/৩ = ২ বছর করে ভোগ করে। রোহিনী নক্ষত্রের স্থিতিকাল ৬০ দণ্ড ( ২৪ ঘণ্টা )। বর্তমান নক্ষত্র যে সময় পর্যমত্ম অবস্থান করে তা থেকে পূর্ববর্তী নক্ষত্র যে সময় পর্যন্ত অবস্থান করেছিল তা বিয়োগ করলেই নক্ষত্রে স্থিতিকাল পাওয়া যাবে। যেহেতু ৩০ দণ্ড পর জন্ম হয়েছে সেহেতু সে ৬০ - ৩০ = ৩০ দণ্ড ভোগ করবে। এখন সম্পূর্ণ নক্ষত্র ভোগের জন্য অর্থাৎ ৬০ দণ্ডের জন্য রবির ভোগ্যকাল ২ বছর হলে ৩০ দণ্ডের জন্য রবির ভোগ্যকাল হবে ১ বছর। জন্মের ১ বছর পর রবির ভোগ্যকাল শেষে চন্দ্রের দশা শুরু হবে যা ১০ বছর পর্যন্ত থাকবে।
বিংশোত্তরী মতে কোন জাতকের জন্ম রোহিনী নক্ষত্রে হলে তাকে প্রথমে চন্দ্রের দশা ভোগ করতে হবে। রোহিনী নক্ষত্রের ২৪ দ-- জন্ম হলে তার নক্ষত্র ভোগ্যকাল হবে ৬০ - ২৪ = ৩৬ দণ্ড। এখন ৬০ দণ্ডের জন্য চন্দ্রের ভোগ্যকাল ১০ বছর হলে ৩৬ দণ্ডের জন্য চন্দ্রের ভোগ্যকাল হবে ৬ বছর। জন্মের ৬ বছর পর চন্দ্রের ভোগ্যকাল শেষে মঙ্গলের দশা শুরু হবে যা ৭ বছর পর্যন্ত থাকবে এবং এভাবে মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত দশা ভোগ চলতে থাকবে।
জ্যোতিষ শাস্ত্র মতে লগ্ন-বিচার ও দ্বাদশ ভাব
ফল ।
জন্ম-লগ্নের ১ম , ৪র্থ , ৭ম ও ১০ম স্থানকে কেন্দ্র বলে। যেমন মেষ লগ্নের নক্ষত্রে ১ম স্থানে মেষ , ৪র্থ স্থান কর্কট , ৭ম স্থানে তুলা এবং ১০ম স্থানে মকর রয়েছে। সুতরাং ১ম স্থানে , কর্কটের স্থানে্য, তুলার স্থানে এবং মকরের স্থানে কোন গ্রহ থাকলে তা কেন্দ্রে আছে ধরা হয়। ৯ম ও ৫ম স্থানকে কোণ বলে এবং ৬ষ্ঠ , ৮ম ও ৯ম স্থানকে দুঃস্থান বলে।
গ্রহগণ জন্ম-লগ্নের কেন্দ্র ও কোণে বলশালী হয় এবং শুভ ফল প্রদান করে কিন্তু দুঃস্থানে অশুভ ফল প্রদান করে। জন্ম-রাশি বা জন্ম-লগ্নকে ১ম স্থান ধরে অবশিষ্ট রাশিগুলোকে ২য় , ৩য় , ৪র্থ এই ক্রমে গণনা করে শেষ পর্যমত্ম যে ১২টি স্থান পাওয়া যায় ঐ ১২টি স্থান দ্বারা ১২ প্রকার ভাব ফল নির্ণয় করা হয়। ১ম অর্থাৎ জন্ম-লগ্ন ও জন্ম-রাশি থেকে দেহভাব , ৩য় স্থান থেকে ভ্রাতৃভাব , ৪র্থ স্থান থেকে বন্ধুভাব , ৫ম স্থান থেকে পুত্রভাব , ৬ষ্ঠ স্থান থেকে শত্রুভাব , ৭ম স্থান থেকে পতি বা পত্নীভাব , ৮ম স্থান থেকে আয়ু বা নিধনভাব , ৯ম স্থান থেকে ভাগ্য বা ধর্মভাব , ১০ম স্থান থেকে কর্মভাব , ১১শ স্থান থেকে আয়ভাব এবং ১২শ স্থান থেকে ব্যয়ভাব বিচার করা হয়।
যেমন :--- মেষ রাশি বা মেষ লগ্নের ৭ম স্থানে তুলা রাশি অবস্থিত। ৭ম স্থান দ্বারা পতি বা পত্নীযোগ , বিবাহ ও দাম্পত্য-জীবন বিচার করা হয়। এখন মেষ রাশির ৭ম স্থানে অর্থাৎ তুলা রাশিতে যদি শুভ , উচ্চস্থ ও মিত্র গ্রহ অবস্থান করে এবং শুভ গ্রহের দৃষ্টি থাকে তবে ঐ জাতকের পতি বা পত্নী , বিবাহ ও দাম্পত্য-জীবন সুন্দর হবে। এর বিপরীত হলে বিপরীত ফল প্রসব করবে। এভাবে দ্বাদশ স্থানে গ্রহ-নক্ষত্রে অবস্থান অনুসারে দ্বাদশ প্রকার ভাব বিচার করা হয়। দ্বাদশ স্থানের অধিপতি গ্রহের অবস্থান অনুসারেও দ্বাদশ ভাব নির্ণয় করা হয়।
যেমন :----- মেষ রাশির অধিপতি মঙ্গল তাই মঙ্গল হবে লগ্নপতি। মেষ রাশির ২য় স্থানে বৃষ রাশি রয়েছে। বৃষ রাশির অধিপতি শুক্র তাই শুক্র হবে তনুপতি। এই শুক্রের শুভ বা অশুভ দ্বারা তনু বা দেহভাবের শুভাশুভ বিচার করা হয়।
Comments